মো.জাকির হোসেন :
কুমিল্লার নিমসার দেশের অন্যতম বৃহৎ কাঁচাবাজার হিসেবে প্রসিদ্ধ। দেশের প্রধান জাতীয় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দু’পাশজুড়ে বিশাল এলাকাজুড়ে বাজারটির অবস্থান। দেশের বিভিন্নস্থান থেকে প্রতিদিন শত শত ট্রাক,কাভার্ডভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে বিভিন্ন প্রকারের শাক-সব্জি এখানে নিয়ে আসে পাইকারসহ কৃষকরা। ২৪ ঘন্টা চালু থাকলেও রাত বাড়ার সাথে সাথে মুলত বাজারের ব্যস্ততা বাড়ে। আবার এখান থেকে ক্রয় করে জেলাসহ বিভিন্নস্থানে নিয়ে যাচ্ছে খুচরা বিক্রির জন্য। ব্যস্ততম এই বাজারটিতে কোন নির্দিষ্ট ময়লা আবর্জনার স্থান না থাকায় প্রতিদিনই বাজারের তরকারীর উচ্ছিষ্ট অংশ মহাসড়কের পাশে যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে। এগুলো পঁচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। ফলে পথচারীসহ বাজারে আসা ব্যবসায়ীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।
সরেজমিন ঘুরে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের নিমসার এলাকায় বিগত ১৯ শতকের ৮০’র দশকের শুরুতে বাজারটি চালু হয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দু’পাশসহ রোডডিভাইডারের মাঝেও কেনাবেচা চলে। প্রতিদিন বৃহত্তর রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, যশোহর,পাবনা,বগুড়া, টাঙ্গাইল,ময়মনসিংহ,সিলেট,চাঁদপুর,নোয়াখালীসহ কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলা থেকে পাইকারসহ কৃষকরা নানাজাতের তরিতরকারি,শাক-সব্জি,মৌসুমী ফল ট্রাক,কাভার্ডভ্যান,পিক-আপসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে এই বাজারে নিয়ে আসছে।
বাজারটিতে মুলত রাত বাড়ার সাথে সাথে ব্যস্ততা বেড়ে দিলের আলো বাড়ার সাথে সাথে কর্মব্যস্ততা কমে আসে। বিভিন্নস্থান থেকে আসা পণ্যসামগ্রী আড়ৎগুলোতে আনার পর আবার সেই মালগুলো অন্য পাইকাররা কিনে নিয়ে যাচ্ছে পররর্তিতে অন্য কোন জেলা বা স্থানীয় কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলায়। অভিযোগ রয়েছে মহাসড়কের উপর অসংখ্য ট্রাক ,কাভার্ডভ্যান গাড়িতে রেখেই মালামাল বিক্রি করায় প্রতিদিন গভীর রাত থেকে সকাল ৮/৯ টা পর্যন্ত নিমসার বাজারের ফোরলেনের উভয় অংশে থেমে থেমে যানজট সুষ্টি হয়।
এসময় ব্যস্ততম, মহাসড়কে চলাচলরত দ্রুতগতির যানবাহন চালকদের দুর্ঘটনা এড়াতে গতি কমিয়ে বাজারটি পারাপার হতে দেখা যায়।
এছাড়াও রোডডিভাইডারে অনেক বিক্রেতা মালামাল বিক্রি করায় দুর্ঘটনার আশংকায় থাকে অনেক ক্রেতা বিক্রেতা। তবে সবচেয়ে দুর্ভোগ বাজারের অবিক্রিত পঁচে,গলে যাওয়া পণ্য ও তরকারী উচ্ছিষ্ট বাজারে নির্দিষ্ট কোন আবর্জনা ফেলার জায়গা না থাকায় বিক্রেতারা মহাসড়কের পাশেই ফেলে দিচ্ছে। আর এভাবেই মহাসড়কের পাশে জমছে আবর্জনার স্তুপ। এতে করে প্রতিদিনই নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। পাশাপাশি মহাসড়কের পাশ দিয়ে চলাচলরত পথচারী,ব্যবসায়ীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এদিকে মহাসড়কের পাশে উচ্ছিষ্ট ফেলায় মানুষ বাধ্য হয়ে সড়কের উপর দিয়ে পারাপার হওয়ায় প্রায়ই দুর্ঘটনা কবলিত হয়ে হতাহত হচ্ছেন।
বিষয়টি জানতে চাইলে একাধিক ব্যবসায়ী জানান, এতদিন বাজারটি সরকার এককভাবে ইজারা দিলেও সম্প্রতি সরকারী নির্দিষ্ট বাজারের স্থানের বাইরেও দু’টি গ্রুপ ব্যক্তি মালিকানাধীন স্থানে পৃথক দুটি বাজার পরিচালনা করছে। এতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছে বাজারের আবস্থান। আর এজন্য একাধিকস্থানে আবর্জনার স্তুপ জমছে।
এছাড়াও তারা আরো বলেন,বাজারে নির্দিষ্ট কোনস্থানে ময়লা ফেলার কোন স্থান নেই। বিষয়টি জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শওকত আরা কলি বলেন, বাজারের ইজারাদারকে চিঠি দিয়েছি,এছাড়াও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে মামলা দায়েরের সুপারিশ চেয়ে বার্তা পাঠিয়েছি।